হাতেকলমে
১.১ অজেয় রায়ের লেখা একটি জনপ্রিয় বইয়ের নাম লেখো।
উত্তর। 'আমাজনের গহনে' অজেয় রায়ের লেখা একটি জনপ্রিয় বই।
১.২ তিনি কোন্ কোন্ পত্রিকায় নিয়মিত লিখতেন?
উত্তর। শুকতারা, সন্দেশ, কিশোর ভারতী ইত্যাদি পত্রিকায় তিনি নিয়মিত লিখতেন।
২. নীচের প্রশ্নগুলির একটি বাক্যে উত্তর লেখো :
২.১ প্রফুল্লর রচনা সুধীরবাবুর কেন পছন্দ হয়নি?
উত্তর। প্রফুল্ল ‘দে সরকারের' রচনা বই দেখে ‘বাংলাদেশে বর্ষাকাল’ রচনাটি পুরো নকল করেছিল, তাই তার রচনা সুধীরবাবুর পছন্দ হয়নি।
২.২ নিতাই শাস্তি পেল কেন?
উত্তর। নিতাই রচনা না লিখে মায়ের অসুস্থতার মিথ্যা অজুহাত দেওয়ায় তাকে শাস্তি পেতে হয়েছিল।
২.৩ সুধীরবাবু কোন্ অন্যায়কে ক্ষমা করেন না?
উত্তর। ক্লাসে না পড়ে আসার অন্যায়কে সুধীরবাবু ক্ষমা করেন না।
২.৪ সুধীরবাবুর কপালের ভাঁজ কীসের চিহ্ন?
উত্তর। সুধীরবাবুর কপালে ভাঁজ পড়লে বোঝা যায় যে, তিনি সন্তুষ্ট হতে পারেননি।
৩. নীচের প্রশ্নগুলির কয়েকটি বাক্যে উত্তর লেখো :
৩.১ তিনকড়ি হাঁ করে হাবুর খাতার দিকে তাকিয়েছিল কেন?
উত্তর। তিনকড়ি হাবুর পাশে বসে লক্ষ করছিল যে, হাবু সাদা খাতা সামনে ধরে রচনা পড়ে যাচ্ছে। সাদা খাতা দেখে রচনা পড়ার বিষয়ে তিনকড়ি বিস্মিত হয়ে হাবুর খাতার দিকে তাকিয়েছিল।
৩.২ “ছেলেটা চর্চা রাখলে বড়ো হয়ে নির্ঘাত সাহিত্যিক হবে”—ছেলেটি সম্বন্ধে একথা বলার কারণ কী?
উত্তর। হাবুলচন্দ্র বাংলাদেশে বর্ষাকাল রচনায় সম্পূর্ণ নিজের অভিজ্ঞতায় কথা প্রকাশ করেছিল। সহজ সরল ভাষায় নিজের অভিজ্ঞতা থেকে সে রচনাটি বলেছিল। সেজন্যই সুধীরবাবু মনে করেছেন হাবুর এই মৌলিক রচনার চর্চা যদি অব্যাহত থাকে তাহলে সে ভবিষ্যতে অবশ্যই একজন সাহিত্যিক হিসাবে খ্যাতিমান হবে।
৩.৩ “মাঝে মাঝে পাতা উলটিয়ে বলে চলে”—পাতা ওলটানোর কারণ লেখো।
উত্তর। হাবু রচনা পড়তে পড়তে মাঝে মাঝে পাতা ওলটায়। সে বোঝাতে চায় যে, সে রচনাটি খাতায় লিখেছে। হাবুর না লেখার কথা গোপন রাখতেই সে পাতা ওলটায়।
৩.৪ “বেমালুম ঠকাল আমাকে'—হাবুল কি সত্যিই মাস্টারমশাইকে ঠকিয়েছিল?
উত্তর। হাবু তার রচনা খাতায় বাড়ির কাজের রচনাটি লিখে আনেনি। সে ক্লাসে দাঁড়িয়ে মুখে মুখে মাস্টারমশাইকে রচনাটি শুনিয়েছিল। ফলে বাড়ির কাজ না করে এনে ছলনার আশ্রয় নিয়ে সে অবশ্যই মাস্টারমশাইকে ঠকিয়েছিল। কিন্তু তার রচনার মৌলিকতা প্রশংসনীয় ছিল।
৩.৫ হাবুলের রচনা শুনে সুধীরবাবুর হাবুলকে কী বলার ইচ্ছে হয়েছিল? শেষ পর্যন্ত সেই ইচ্ছে তিনি পূরণ করলেন না কেন?
উত্তর। হাবুলের রচনা শুনে সুধীরবাবু তাকে পিঠ চাপড়ে উৎসাহিত করার ইচ্ছা প্রকাশ করেছিলেন।
কিন্তু তিনি তা করতে পারেননি কারণ তাহলে পরবর্তীকালে অনেক ছাত্র বাড়ির কাজ না করে স্কুলে আসবে এবং হাবুকে অনুসরণ করে না লিখে বানিয়ে বলবে। ফলে ক্লাসের শৃঙ্খলারক্ষা করা অসম্ভব হবে। তাই তিনি তার ইচ্ছা পূরণ করলেন না।
৪. নীচের শব্দগুলি থেকে উপসর্গ পৃথক করে, তা ব্যবহার করে নতুন শব্দ তৈরি করো :
প্রশান্ত, অবহেলা, দুর্ভোগ, অনাবৃষ্টি, বেমালুম।
শব্দ 👉 উপসর্গ👉নতুন শব্দ
প্রশান্ত 👉প্র 👉প্রকাশ, প্রকার।
অবহেলা👉 অব 👉অবতীর্ণ, অবকাশ।
দুর্ভোগ👉দুঃ👉দুর্বার, দুর্যোগ।
অনাবৃষ্টি👉অন্য👉অনাদর, অনাবাদি।
বেমালুম👉 বে 👉 বেকার, বেকায়দা।
৫. ‘পাল্লা’ শব্দটিকে দুটি ভিন্ন অর্থে ব্যবহার করে দুটি বাক্য লেখো :
পাল্লা—দরজা বা জানালার পাটা—ঝড়ে কাচের পাল্লা ভেঙে গেল।
পাল্লা—প্রতিদ্বন্দ্বিতা—তোমার সঙ্গে আমি পাল্লা দিতে অক্ষম।
৬. নীচের বাক্যগুলি থেকে কর্তা, কর্ম ও ক্রিয়া খুঁজে বের করে ছকের মধ্যে লেখো :
৬.১ আমি রচনা লিখতে বলেছি।
৬.২ হরিপদ বাবুকে তাড়া লাগায়।
৬.৩ ছেলেরা যে যার রচনা খাতা বের করে ওপরে রাখে।
৬.৪ তিনি ঘড়ি দেখলেন।
কর্তা👉কর্ম👉 ক্রীয়া
৬.১ আমি👉রচনা👉লিখতে বলেছি।
৬.২ হরিপদ👉হাবুকে👉তাড়া লাগায়।
৬.৩ ছেলেরা যে যার👉 রচনা খাতা 👉বের করে ওপরে রাখে।
৬.৪ তিনি👉ঘড়ি👉দেখলেন।
৭. বাক্যগুলির উদ্দেশ্য ও বিধেয় অংশকে আলাদা করো ঃ
উত্তর।
উদ্দেশ্য👉বিধেয়
৭.১ ভজটা👉কিছুতেই ছাড়লে না।
৭.২ সুধীরবাবু👉মন দিয়ে শোনেন।
৭,৩ হাবু👉শুয়ে কান পেতে শোনে।
৭.৪ দুর্গাপূজার পৌরাণিক আখ্যানটা👉বলে দেবেন ক্লাসে।
৮. ঠিক উত্তরে ‘√’ চিহ্ন দাও :
উত্তর। ৮.১ হরিপদর ডাকে সুধীরবাবু অবাক হন! (যৌগিক বাক্য✅/সরল বাক্য)
৮.২ গতকাল তোমার মাকে দেখেছি গোঁসাইবাড়িতে কীর্তন শুনছেন। (জটিল বাক্য/যৌগিক বাক্য✅)
৮.৩ ফের যদি রচনা আনতে ভুল হয়, তাহলে তোমার কপালে দুঃখ আছে। (সরল বাক্য/জটিল বাক্য✅)
৯. নীচের বাক্যগুলি থেকে অনুসর্গ খুঁজে বের করো এবং নিম্নরেখ পদের বিভক্তি উল্লেখ করো :
উত্তর।
৯.১ বাবার* কাছ থেকে* চিঠি আনতে হবে।—‘র’ বিভক্তি অনুসর্গ।
৯.২ উঠানে* কিছু* ছেলে খেলছে।—‘এ’ বিভক্তি অনুসর্গ
৯.৩ কয়েকজনকে বেছে বেছে পড়তে বলেন।—‘কে’ বিভক্তি অনুসর্গ
৯.৪ দে সরকারের রচনার* বই থেকে* হুবহু টুকে এনেছ।—‘র’ বিভক্তিঅনুসর্গ।
১০. নীচের প্রশ্নগুলির নিজের ভাষায় উত্তর লেখো :
১০.১ স্কুলের গেটে দাঁড়িয়ে হাবুর কী মনে হচ্ছিল?
উত্তর। স্কুলের গেটের সামনে দাঁড়িয়ে হাবু দ্বিধাগ্রস্তভাবে ভাবছিল যে, সেদিন স্কুলে না ঢুকে বাড়ি ঘিরে যাবে কিনা।
১০.২ তার চোখে স্কুলের ভিতরের কোন ছবি ধরা পড়ে?
উত্তর। একতলা স্কুলবাড়ির ঘরে ঘরে ছেলেদের কলরব চলছে। সকাল ৭টায় স্কুল শুরুর আগে কিছু ছেলে তখনও খেলা করছে। হারুর মনে কিন্তু বাংলা শিক্ষক সুধীরবাবুর ভারিক্কি চেহারার ছবি ফুটে উঠছে।
১০.৩ হাবু শেষের দিকের বেঞ্চে বসতে চায় না কেন? সে শেষ পর্যন্ত কোথায় গিয়ে বসে?
উত্তর। শেষের দিকের বেঞ্চে বসা ছাত্রদের প্রতি মাস্টারমশাইরা কড়া নজর রাখেন। সেজন্য হাবু শেষের দিকের বেঞ্চে বসতে চায় না।
তাই হাবু স্যারেদের তীক্ষ্ণ নজর এড়াবার জন্য মাঝামাঝি জায়গায় থার্ড বেঞ্চে তিনকড়ির পাশে গিয়ে বসে।
১০.৪ “এইটাই সুধীরবাবুর মেথড”—সুধীরবাবুর মেথডটি কী? তার এমন মেথড অবলম্বন করার যুক্তিটি কী?
উত্তর। ক্লাসের ছেলেদের রচনা লিখতে দিলে সুধীরবাবুর বেছে বেছে কিছু ছেলেকে লেখা রচনাটি পড়তে বলেন। অন্যেরা তখন মন দিয়ে রচনা পড়া শোনে। এটাই হল সুধীরবাবুর পড়ানোর মেথড বা পদ্ধতি।
সুধীরবাবু প্রত্যেকের রচনা লেখা খাতা বাড়িতে নিয়ে গিয়ে ভুলগুলি সংশোধন করে দেন। কিন্তু যেহেতু অন্যদের লেখা সকলে পড়তে পারে না সেজন্য ক্লাসে কতকগুলি রচনা পড়া শেষ হলে লেখার মান সম্বন্ধে ছাত্রদের একটা ধারণা জন্মাবে এবং ভালো লেখার জন্য তাদের আগ্রহ সৃষ্টি হবে। এজন্য সুধীরবাবু এই পদ্ধতি অবলম্বন করতেন।
১০.৫ রচনা পড়ার সময় প্রফুল্লকে সুধীরবাবু থামিয়ে দিলেন কেন? তাকে তিনি কোন্ পরামর্শ দিলেন?
উত্তর। প্রফুল্ল তার লেখা ‘বাংলাদেশে বর্ষাকাল’ রচনাটি কিছুটা পড়ার পর সুধীরবাবু তাকে থামিয়ে দিলেন। প্রফুল্ল রচনাটি ‘দে সরকারের’ বই থেকে হুবহু নকল করে এনেছিল। সেজন্যই সুধীরবাবু তাকে থামিয়ে দিলেন।
সুধীরবাবু প্রফুল্লকে কেবলমাত্র একটা বই অনুসরণ না করে আরও কয়েকটি বই অনুসরণ করে নিজে লেখার চেষ্টা করার পরামর্শ দিলেন।
১০.৬ ‘সুধীরবাবুর একটি মুদ্রাদোষ’—কী সেই ‘মুদ্রাদোষ’? কখনই বা এর বহিঃপ্রকাশ ঘটেছিল?
উত্তর। কথার শেষে ‘মনে থাকবে’ শব্দবন্ধটি বলা সুধীরবাবুর মুদ্রাদোষ। মনে থাক বা না থাক, তিনি সবাইকেই একথা বলে থাকেন।
নিতাই সেদিন ক্লাসের লাস্ট বেঞ্চে বসেছিল। সে রচনা লিখে আনেনি। অজুহাত হিসাবে সে মায়ের অসুস্থতার কথা মিথ্যা করে জানিয়েছিল। কিন্তু নিতাই ধরা পড়ে যায়, তার মিথ্যা কথা বলার জন্য। সুধীরবাবু তাকে পরদিন রচনা লিখে আনার নির্দেশ দেন। ভুলে গেলে তার কঠোর শাস্তির কথা জানিয়ে তিনি ‘মনে থাকবে’ শব্দবন্ধটি ব্যবহার করেছিলেন।
১০.৭ “তবেই রচনার প্রকৃত সাহিত্যিক মূল্য আসবে”—সুধীরবাবুর মতে কীভাবে একটি রচনা সাহিত্যিক মূল্যে অনন্য হয়ে ওঠে?
উত্তর। ক্লাসের ফার্স্ট বয় প্রশান্ত তার ‘বাংলাদেশে বর্ষাকাল’ রচনাটি বেশ সুন্দর করে গুছিয়ে লিখলেও সুধীরবাবুর সে লেখা মনে ধরেনি। কারণ হিসাবে তিনি তার লেখায় মৌলিকত্বের অভাবের কথা উল্লেখ করেছেন।
সুধীরবাবুর মতে একটি রচনা কেবলমাত্র রচনা বই এর উপর নির্ভর করে লিখলে তাতে মৌলিকত্ব থাকে না। নিজ নিজ অভিজ্ঞতালব্ধ জ্ঞানকে অবলম্বন করে স্বকীয় চিন্তাচেতনার প্রকাশ ঘটলে একটি রচনা সাহিত্যিক মূল্যে অনন্য হয়ে ওঠে।
১০.৮ “শুনছিস্? স্রেফ আবোল তাবোল।”—হাবু ওরফে হাবুলচন্দ্রের রচনা পড়াকে প্রশান্তর ‘আবোল তাবোল' মনে হয়েছে কেন? তুমি কী এর সঙ্গে একমত?
উত্তর। হাবুলচন্দ্র সেদিন ‘বাংলাদেশে বর্ষাকাল’ রচনা খাতায় লিখে আনেনি। সুধীরবাবু তাকে রচনা পড়তে বলায় তবে কোনো কিছু না ভেবে নিজের অভিজ্ঞতাকে পুঁজি করে সহজ সরল ভাষায় তার কথা বলে। হাবুর বলার মধ্যে ভাষার বাঁধুনি না থাকায় হাবুর রচনাকে প্রশান্ত আবোল তাবোল বলেছে।
না আমি প্রশান্তর সঙ্গে একমত নই। রচনার তথ্য বই থেকে জোগাড় করলেও রচনার গুণগত মান লেখকের নিজস্বতা এবং মৌলিকতার উপর নির্ভরশীল।
১০.৯ “তার কাছে রহস্য পরিষ্কার হয়ে গেল”—কোন্ রহস্যের কথা বলা হয়েছে? কীভাবে তার জট ছাড়ল?
উত্তর। ক্লাসে সকলের রচনা পড়ার পর সুধীরবাবুর নির্দেশে মনিটার হরিপদ সকলের থেকে খাতা জমা নিতে যায়। হাবু খাতা জমা দিতে চায় না। হাবুর অনিচ্ছার কথা জেনে সুধীরবাবু হাবুর খাতা নিয়ে দেখেন সে রচনা লেখেনি এবং সেজন্যই সে খাতা জমা দিতে চায়নি। এটাই ছিল তার খাতা না জমা দেবার রহস্য।
সেই রহস্যের জাল ছাড়াতে গিয়ে সুধীরবাবু দেখলেন হাবুর বীজগণিতের খাতায় কোনো রচনা লেখা নেই। তিনি দীর্ঘ ২০ বছরের অভিজ্ঞতায় এ জাতীয় অভিজ্ঞতার মুখোমুখি ইতিপূর্বে কোনোদিন হননি। তিনি বুঝতে পারলেন যে, হাবু যে রচনা বলেছে তা সে লেখেনি, বানিয়ে বানিয়ে বলেছে।
******************************************************